ইউসুফ (আঃ) এর ভাইদের কাহিনী আমরা অনেকেই জানি। তাদের পিতা ইউসুফ (আঃ) কে সবচেয়ে বেশি আদর করতেন, ব্যাপারটা তাদের কাছে ভালো ঠেকেনি, তাই তারা পরিকল্পনা করেছিলেন ইউসুফকে হত্যা করে ফেলবেন অথবা তাকে কুয়ার মধ্যে ফেলে দেবেন, জানে মারবেন না।
.
ইন্টারেস্টিং বিষয়টা হল, তারা যখন এই অপকর্মের নিয়ত করছিলেন, তখন তারা মনে মনে এটাও ঠিক করেছিলেন যে, এই কাজ করার পরে তারা আবার তওবা করে "ভাল" হয়ে যাবেন ! কুরআনে এসেছে এভাবে,
.
"(তাই শয়তান তাদেরকে পরামর্শ দিল) ইউসুফকে মেরে ফেলো অথবা তাকে কোন এক (অজানা) জায়গায় নির্বাসনে দিয়ে এসো, (এরপর দেখবে) তোমাদের পিতার দৃষ্টি তোমাদের দিকেই নিবিষ্ট হবে, অতঃপর তোমরা (আবার) সবাই ভালো মানুষ হয়ে যেও।" [সূরা ইউসুফ: ৯]
.
আমাদের মধ্যে এরকম একটা প্রবণতা কাজ করে। "আগে আকাম সব করে নিই তারপরে বুড়া বয়সে নামায-হজ্জ করে ভাল বনে যাব" - এই চিন্তাটা মুখ ফুটে না বললেও বহু মানুষের অন্তরে অন্তরে। অনেকে আছে এমন যারা বোঝেন দ্বীনের কাজ করতে গিয়ে অনেক রিস্ক আর জান-মালের ক্ষতি হতে পারে, তারা অনেক সময় এভাবে চিন্তা করে বা তাদেরকে তাদের বাবা-মায়েরা বোঝায়, "আগে পড়াশোনা করে ভালভাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে তারপর আরামছে দ্বীনের কাজ কর"।
.
আগে নিজের দুনিয়াবী স্বার্থ নিশ্চিত করে, সেটা হারাম পথে হোক, কিংবা ফরয বাদ দিয়ে হোক, তারপরে দ্বীনের পথে আসা বা দ্বীনের কাজ করা, এটা সাহাবাদের অনুসৃত পথ নয়। এ ধরণের চিন্তাভাবনার দুটো সমস্যা আছে।
.
১) আপনি নিশ্চিতভাবে জানেন না, আপনি যে আকামগুলো করে রাখছেন বা যে কাজটা এখন আপনার করা উচিত কিন্তু আপনি সেগুলো করছেন না, এমন করার জন্য আল্লাহ আপনাকে ক্ষমা করবে কিনা, আপনি কখনই তা নিশ্চিত হতে পারবেন না। এটা একটা উচ্চ মানের শয়তানি, আল্লাহর সাথে লুকোচুরি খেলার মত।
.
২) আপনি যদি এভাবে চিন্তা করেন যে আগে আপনি প্রতিষ্ঠা লাভ করে একটা নিরাপদ অবস্থানে পৌঁছে তার পর দ্বীনের কাজ করবেন, সেক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে, আপনি নিশ্চিত নন যে আপনার এই প্ল্যান আসলেই কাজ করবে কিনা। বিপদ যেকোন সময় আসতে পারে, মৃত্যু যেকোন সময়ে চলে আসতে পারে। প্রতিটা কাজেরও একটা সময় আছে। আপনি কালকে ভালো কাজ করার সুযোগ পাবেন, এই গ্যারান্টি আপনাকে কে দিল? আপনি আজকে দ্বীনের পথে আছেন, কালকেও থাকবেন, এ ব্যাপারে আপনি এতটা কনফিডেন্ট কিভাবে হলেন?
.
আমাদেরকে মনে রাখতে হবে, আমাদের উপর যেকোন সময় ফিতনা আপতিত হতে পারে, যেকোন সময় আমাদের মৃত্যু চলে আসতে পারে। এরকম হতেই পারে আপনি তওবা করার কোন সুযোগই পেলেন না। আপনি ভালো হবার জন্য যথেষ্ট সময় পেলেন না। আর বাস্তবতা থেকে আমরা দেখি, "সময় হোক, আমি আস্তে ধীরে ভাল হয়ে যাব" চিন্তাধারী ব্যাক্তিদের বেশিরভাগেরই ভাল হয়ে ওঠা হয়ে না। ভালো হতে চাইলে, এখনই চেষ্টাটা শুরু করে দিন, ঠিক এখনই। নিয়ত করে ফেলুন এই মুহূর্তেই যে আপনি দ্বীনের পথে চলবেন। একটু দেরি করে ফেললে হয়তো অনেক কিছু মিস করে ফেলবেন, যেটা কখনই আর পূরণ হবার নয়!
.
.
Collected From
Brother
Zim Tanvir
No comments:
Post a Comment