“Beauty is in the eye of the beholder.”
সৌন্দর্য দৃস্টিভঙ্গির উপর নির্ভরশীল– বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদ। সবার কাছে সুন্দরের সংজ্ঞা এক না। মডার্ন, পোষ্ট-মডার্ন, মেটা মডার্ন ধারার আর্টের শৈল্পিক মূল্য কতটুকু? কোন কোন বৈশিস্ট থাকলে একটি চিত্রকর্ম বা একটি গান শিল্প বলে বিবেচিত হবে? সৌন্দর্য কিংবা শ্রুতিমধুরতা কি শিল্প বলে বিবেচিত হবার আবশ্যিক পূর্বশর্ত নাকি?এধরণের আলোচনায় অবধারিত ভাবেই শোনা যায় – “Beauty is in the eye of the beholder.”
.
.
তবে সৌন্দর্যের পরিবর্তনশীল সংজ্ঞা, কিংবা ব্যাক্তিভেদে যে সুন্দর-অসুন্দরের ধারণার পার্থক্য হতে পারে, এটা শুধুমাত্র একটা আধুনিক কনসেপ্ট –কিংবা আধুনিকতার অবক্ষয়, এমনটা বলা যাবে না। এধরণের ধারণা আগেও মানুষের মধ্যে ছিল, তবে হয়তো এতোটা ব্যাপকভাবে না। বিখ্যাত আরব কবি আবু নুওয়াস এক মজার ঘটনা বর্ণনা করেছেনঃ
.
একবার এক তাঁতী আমাকে দাওয়াত করলো। তার বাড়িতে আমাকে আপ্যায়ন করার জন্য অত্যন্ত বিনীত আবদার করলো, আর তাকে ‘হ্যাঁ” না বলা পর্যন্ত আমার পেছনে লেগেই থাকলো। শেষমেশ আমি রাজি হয়ে তার সাথে বাড়িতে গেলাম। দেখলাম, তার বাড়িটি ভালোই। দেখলাম, সে মোটামুটি ভালোই আয়োজন করেছে, অন্য তাঁতীদেরও জড়ো করেছে। খাওয়াদাওয়া শেষ হবার পর সে আমাকে বলল-
.
জনাব! আমার একান্ত কামনা, আপনি আমার দাসী সম্পর্কে কিছু কবিতা বলবেন। সে তার এক দাসীর প্রতি প্রবলভাবে আসক্ত ছিল। আমি তাকে বললাম – আমার সামনে নিয়ে এস, আমি তাকে দেখে তার গঠনাকৃতি ও তার রূপ সৌন্দর্য নিয়ে কবিতা বলব। সে তাকে পর্দার বাইরে নিয়ে এলে আমি দেখলাম আল্লাহ্র এক কুশ্রী ও বিদঘুটে সৃষ্টি, কৃষ্ণ, চুলে সাদা-কালোর মিশ্রনে বদ-সুরত, যার মুখের লালা বুকে গড়িয়ে পড়ছিল।
.
আমি তাঁতিকে জিজ্ঞেস করলাম, তার নাম কি? সে বলল, তাসনীম। তখন আমি কবিতা রচনা করলাম-
.
তাসনীমের প্রেম আমার রাতকে বিনিদ্র করে রেখেছে, সে এক কিশোরী বাঁদি সৌন্দর্যে পেঁচার সেরা; তার মুখের ঘ্রাণ যেন ঝাঁঝাল সিরকা কিংবা রসুনের এক গাঁট…
.
কবিতা শুনে তাঁতি আনন্দে আত্বহারা হয়ে নাচতো লাগল, আর সারা দিন হৈ হৈ করে আনন্দ প্রকাশ করলো… [আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া, দশম খন্ড, পৃ ৩৯৮]
.
.
আবু নূওয়াসের কাছে যে আল্লাহ্র এক কুশ্রী সৃষ্টি [বর্ণনা পড়ে, আমার কাছেও!], তাঁতির কাছে সে রোমের রাজকুমারীর চাইতেও সুন্দর। একই সাথে এটাও লক্ষ্যনীয়, আবু নুওয়াসের এই কবিতা – যেটাকে কোন ভাবেই প্রীতিকর বলা যায় না- সেটাই তাঁতির আনন্দে আত্বহারা হবার উপলক্ষ। আপনি চারপাশে তাকালেই দেখবেন শুধু সৌন্দর্য না, এক অর্থে সমস্ত বাস্তবতাই দৃস্টিভঙ্গির উপর নির্ভরশীল।
.
.
কোন পরিস্থতিতে আপনার মনের অবস্থা কি রকম, তা অনেকাংশেই আপনার দৃস্টিভঙ্গির উপর নির্ভরশীল। জাহিলিয়্যাতে কন্যা সন্তানের জন্মকে মানুষ চরম অপমানজনক মনে করতো। অথচ কিন্তু ইসলামে এসে এ মানুষগুলোই একে অমূল্য নিয়ামাহ মনে করছে।
.
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন – দুনিয়া মুমিনের জন্য কারাগার স্বরূপ আর কাফিরের জন্য জান্নাত স্বরূপ। [সাহিহ মুসলিম]
.
দুনিয়া তো বদলাচ্ছে না। দুনিয়া তার জায়গায় অপরিবর্তিতই আছে। বদলাচ্ছে দৃষ্টিভঙ্গি। আর এই দৃস্টিভঙ্গির পার্থক্যের কারণেই এক জনের কাছে যে দুনিয়া কারাগার, আরেকজনের কাছে সেটা আনন্দ উদ্যান। অন্য এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ “
.
“তুমি দুনিয়াতে বসবাস কর এমন অবস্থায় যেন তুমি একজন আগন্তুক ব্যক্তি অথবা পথযাত্রী মুসাফির” [আল বুখারি]
.
যে ব্যক্তিকে নিজের হৃদয়কে সম্পূর্ণভাবে আখিরাতের সাথে আবদ্ধ করতে সক্ষম হয় নি, তার পক্ষে কি সম্ভব দুনিয়াতে একজন মুসাফিরের মত থাকা? যার কাছে জীবনের অর্থ হল, দোলনা থেকে কবর পর্যন্ত ভালো রেসাল্ট, ভালো ডিগ্রি, ভালো চাকরি, সুন্দরী স্ত্রী, সামাজিক সম্মান, সম্পদ, প্রভাব প্রতিপত্তি, ইত্যাদির সম্মিলিত যোগফল – তার জন্য দুনিয়া অনন্তকালের যাত্রাপথে একটা স্টপেজ মাত্র না। এটাই তার কাছে অনন্ত কালের সমতুল্য। যা ইচ্ছে আছে, যা আকাঙ্ক্ষা আছে, যা সাধ আছে সব এখানেই মিটিয়ে যেতে হবে। শব্দ-গন্ধ-কাঠামো-রঙ-আকৃতির যে বাস্তবতা আমার সামনে আছে, কামনা-বাসনার হাতছানি আছে, সেটা আমি ছেড়ে দেবো, এমন এক জীবনের জন্য যা আমি কল্পনা করতে পারি না? এমন একজনের জন্য যাকে আমি দেখছি না? শুনছি না? অনুভব করতে পারছি না? অথচ আমার চারপাশের এই বাস্তবতাকে আমি অনুভব করতে পারছি। কিভাবে একজন বিলিয়েনেয়ার বিযনেস টাইকুন, তার সব সম্পদ ত্যাগ করে পাহাড়ে-পর্বতে আগুনের বৃস্টির নিচে জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নেন? আর মৃত্যুকে জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাসেন? কিসের শক্তিতে?
.
.
বিশ্বাসের শক্তিতে। ঈমানের শক্তিতে, যা মানুষের চিন্তার কাঠামো, বাস্তবতাকে দেখার ধাচকেই পালটে দেয়। নিঃসন্দেহে এটা একমাত্র আল্লাহ ‘আযযা ওয়া জালের পক্ষ থেকে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁর বিশ্বাসী বান্দাদের হৃদয়গুলোকে প্রশান্ত করে দেন। এজন্যই যা পুরো বিশ্বের কাছে জীবন নষ্ট করা, যা সমগ্র বিশ্বের কাছে আত্বঘাতি উন্মাদনা, কিছু মানুষের জন্য সেটাই – পরম পাওয়া – শাহাদাহ।
.
দৃস্টিভঙ্গির পার্থক্য বাস্তবতাকে মানুষ কিভাবে অনুভব করে, তা কিভাবে বদলে দিতে পারে –সম্ভবত তাঁর সবচেয়ে সুন্দর উদাহরণ আছে সূরা আহযাবে। যখন ক্বুরাইশ, বানু গাতাফান, ইহুদী গোত্রদের সম্মিলিত বাহিনী মুসলিমদের ঘিরে ফেললো, তখন সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী দু রকমের প্রতিক্রিয়া দেখা গেল-
.
একদল বললো- আমাদেরকে প্রদত্ত আল্লাহ ও রসূলের প্রতিশ্রুতি প্রতারণা বৈ নয়। [আল আহযাব, ১২]
.
আরেকদল বললো – আল্লাহ ও তাঁর রসূল এরই ওয়াদা আমাদেরকে দিয়েছিলেন এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূল সত্য বলেছেন। এতে তাদের ঈমান ও আত্নসমর্পণই বৃদ্ধি পেল। [আল আহযাব, ২২]
.
প্রথম দল সম্পর্কে আল্লাহ্ ‘আযযা ওয়া জালা আমদের জানিয়ে দিয়েছেন। তারা ছিল মুনাফিক ও তারা, যাদের অন্তরে ছিল রোগ। আর দ্বিতীয় দলকে আল্লাহ ‘আযযা ওয়া জাল বলেছেন মু’মিন। এখানে এই দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য নিছক, চিন্তার কাঠামোগত পার্থক্য না, বরং ইমান ও কুফর, ইমান ও নিফাকের মধ্যে পার্থক্য।
.
.
.
শুধুমাত্র ২০১৫ সালে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর উপর অ্যামেরিকা বোমা ফেলেছে ২৩,১৪৪ টি। [http://tinyurl.com/hr35n2o]। এটা সে অ্যামেরিকা, গত দুই হাজার বছরে যাদের সেনাবাহিনীর মতো শক্তিশালী সেনাবাহিনী পৃথিবী দেখেনি। এটা সেই অ্যামেরিকা যাদের সামরিক বাজেট বাকি বিশ্বের সম্মিলিত সামরিক বাজেটের প্রায় সমান। এটা সেই অ্যামেরিকা যাদের পারমাণবিক অস্ত্র দিয়ে ৪৮,২৬৯ কিলোমিটারর পরিধির মধ্যে অবস্থিত সব বেসামরিক বিল্ডিং ধ্বংস করে দেয়া যায়। পৃথিবীর পরিধি হল ৪০,০০৮ কিলোমিটার। সেই অ্যামেরিকা যারা ইরাক-আফগানিস্তানে হত্যা করেছে লাখো মুসলিমকে। সেই অ্যামেরিকা যারা ক্রমাগত ইস্রাইলকে সাহায্য করছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে। সেই অ্যামেরিকা যারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে ক্রুসেড শুরু করেছে।
.
.
খন্দকের যুদ্ধের সেদিনে মাদীনাতে দুটি দল দেখা গিয়েছিল। সে বিভক্তি আজো আছে। একদল অ্যামেরিকার এই চোখধাধানো, ক্ষমতা দেখলো, আর তারপর তারা এ উপসংহারে আসলোঃ এই অ্যামেরিকার সাথে পারা সম্ভব না। এদের সাথে লাগতে যেয়ো না, ধ্বংস হয়ে যাবে। এসো তাদের সাথে মৈত্রী করি। তাদের দেয়া গণতন্ত্র অনুসরণ করি, তাদের ধ্যানধারণা, মতাদর্শ গ্রহণ করি। তাদের মতন চিন্তা করি, তাদের মতো পোষাক পরি, তাদের মতো ভাবতে শিখি। তাদের পছন্দমতো ইসলামকে বদলে নেই। তাদের কাছে তেল বিক্রি করি, তাদের গোলামি করি। আর গোলামি করতে করতে ধীরে ধীরে জ্ঞানবিজ্ঞান, অর্থ-সম্পদের দিক দিয়ে শক্তিশালী হবার চেষ্টা করি। তারপর দেখা যাবে। কেউ কেউ এক কাঠি এগিয়ে বলে বসলো রাসূলুল্লাহ ﷺ আজ বেঁচে থাকলে অ্যামেরিকাকে (ন্যাটোকে) সমর্থন করতেন! এটাই হল হিকমাহ !
.
.
আর আরেকদল উত্তর খোজার জন্য কুরআনের কাছে গেল, যা সাত আসমানের উপর থেকে সমগ্র জগতসমূহের অধিপতি, আল আওয়াল ওয়াল আখির আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা তাঁর রাসূল, আল নাবীউল মালহামা, আল দাহুক আল-ক্বাত্তাল মুহাম্মাদ ইবন আব্দুল্লাহ আল আরাবীর ﷺ উপর নাযিল করেছেন। আর তারা কুর’আনে লেখা দেখতে পেলোঃ
.
.
“আল্লাহ কি তাঁর বান্দার পক্ষে যথেষ্ট নন?” [আয যুমার, ৩৬]
.
“হে নবী, আপনার জন্য এবং যেসব মুসলমান আপনার সাথে রয়েছে তাদের সবার জন্য আল্লাহ যথেষ্ট।“ [আল- আনফাল, ৬৪]
.
“আর বিজয় শুধুমাত্র পরাক্রান্ত, মহাজ্ঞানী আল্লাহরই পক্ষ থেকে…” [আলে ইমরান, ১২৬]
.
“…কতো সামান্য দলই বিরাট দলের মোকাবেলায় জয়ী হয়েছে আল্লাহর হুকুমে। আর যারা ধৈর্য্যশীল আল্লাহ তাদের সাথে রয়েছেন। [সূরা বাক্বারাহ, ২৪৯]
.
হে বিশ্বাসীগণ! যদি তোমরা আল্লাহকে সাহায্য কর, আল্লাহ তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পা দৃঢ়প্রতিষ্ঠ করবেন। [সূরা মুহাম্মাদ, ৭]
.
“…আমার সৎকর্মপরায়ণ বান্দাগণ অবশেষে পৃথিবীর অধিকারী হবে।“ [আল-আম্বিয়া, ১০৫]
.
তারা কি পৃথিবীতে ভ্রমণ করেনি অতঃপর দেখেনি যে, তাদের পূর্ববর্তীদের পরিণাম কি হয়েছে? আল্লাহ তাদেরকে ধ্বংস করে দিয়েছেন এবং কাফিরদের অবস্থা এরূপই হবে। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ মুমিনদের হিতৈষী বন্ধু এবং কাফেরদের কোন হিতৈষী বন্ধু নাই। [সূরা মুহাম্মাদ, ১০,১১]
.
.
তারা কুর’আনে দেখতে পেলোঃ
.
.
“…আমি নাযিল করেছি লৌহ, যাতে আছে প্রচন্ড রণশক্তি এবং মানুষের বহুবিধ উপকার। এটা এজন্যে যে, আল্লাহ জেনে নিবেন কে না দেখে তাঁকে ও তাঁর রসূলগণকে সাহায্য করে। আল্লাহ শক্তিধর, পরাক্রমশালী।“ [আল হাদীদ, ২৫]
.
“…আমি কফিরদের মনে ভীতির সঞ্চার করে দেব। কাজেই গর্দানের উপর আঘাত হান এবং তাদেরকে কাট জোড়ায় জোড়ায়।“ [আল-আনফাল, ১২]
.
“অতঃপর যখন তোমরা কাফিরদের সাথে যুদ্ধে অবতীর্ণ হও, তখন তাদের গর্দানে মারো…” [আল মুহাম্মাদ, ৪]
.
“…হত্যা কর যেখানে তাদের পাও, তাদের বন্দী কর এবং অবরোধ কর। আর প্রত্যেক ঘাঁটিতে তাদের সন্ধানে ওঁৎ পেতে বসে থাক। “ [আত-তাওবাহ,৫]
.
.
অতঃপর তারা কূর’আনে আরও দেখলোঃ
.
.
যারা মুমিন, তারা বলেঃ একটি সূরা নাযিল হয় না কেন? অতঃপর যখন কোন দ্ব্যর্থহীন সূরা নাযিল হয় এবং তাতে জিহাদের উল্লেখ করা হয়, তখন যাদের অন্তরে রোগ আছে, আপনি তাদেরকে মৃত্যুভয়ে মূর্ছাপ্রাপ্ত মানুষের মত আপনার দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখবেন। সুতরাং ধ্বংস তাদের জন্যে। [সূরা মুহাম্মাদ, ২০]
.
আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব যে পর্যন্ত না ফুটিয়ে তুলি তোমাদের জিহাদকারীদেরকে এবং সবরকারীদেরকে এবং যতক্ষণ না আমি তোমাদের অবস্থান সমূহ যাচাই করি। [সূরা মুহাম্মাদ ৩১]
.
“আর তোমাদের কি হল যে, তেমারা আল্লাহর রাহে লড়াই করছ না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে, অত্যাচারী!…” [সূরা আন-নিসা, ৭৫]
.
“আর প্রস্তুত কর তাদের সাথে যুদ্ধের জন্য যাই কিছু সংগ্রহ করতে পার নিজের শক্তি সামর্থ্যের মধ্যে থেকে এবং পালিত ঘোড়া থেকে, আল্লাহর শুত্রু এবং তোমাদের শত্রুদের অন্তরে ত্রাসের সৃষ্টি কর…” [আল-আনফাল,৬০]
.
.
আর তারা তখন বললো, হায়! এতো এমন এক কিতাব যা আমাদের জন্য আর কোন অজুহাতই অবশিষ্ট রাখে নি।
.
.
“বল, তোমাদের নিকট যদি তোমাদের পিতা তোমাদের সন্তান, তোমাদের ভাই তোমাদের পত্নী, তোমাদের গোত্র তোমাদের অর্জিত ধন-সম্পদ, তোমাদের ব্যবসা যা বন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় কর এবং তোমাদের বাসস্থান-যাকে তোমরা পছন্দ কর-আল্লাহ, তাঁর রসূল ও তাঁর রাহে জিহাদ করা থেকে অধিক প্রিয় হয়, তবে অপেক্ষা কর, আল্লাহর বিধান আসা পর্যন্ত, আর আল্লাহ ফাসেক সম্প্রদায়কে হেদায়েত করেন না।“ [আত-তাওবাহ ]
.
এবং তারা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর এই হাদীস পড়লোঃ
“নিশ্চয় জান্নাত হল তরবারির ছায়াতলে” [আল বুখারি]
.
অতঃপর তারা বললো, “আমরা শুনলাম এবং মানলাম।“ [আল বাকারাহ,২৮৫]
.
.
তারা বললোঃ
.
সেই সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী আল্লাহর নামে শপথ করছি, যিনি খুঁটি ব্যতীত আকাশমন্ডলী সৃষ্টি করেছেন। যতদিন পর্যন্ত না ফিলিস্তিনীরা শান্তি তে বসবাস করতে পারছে এবং কাফির সৈন্যরা মুহাম্মাদ ﷺ এর পবিত্র ভূমিকে পরিত্যাগ করছে ততদিন পর্যন্ত না আম্রিকা আর না আম্রিকার অধিবাসিরা শান্তিতে থাকার স্বপ্ন দেখতে পারবে।
.
“আমরা আম্রিকাকে বলি, তোমারা যতোই সীমালঙ্ঘন করো না কেন, তোমরা যতোই ঔদ্ধত্য দেখাও না কেন, তোমরা যতো উচুতেই উড়ো না কেন – জেনে নাও, তোমার প্লেন, তোমাদের জেট, তোমাদের ড্রোন কখনো আল্লাহ-র আরশের নাগাল পাবে না। তোমরা যতো উঁচুতেই ওঠো না কেন, তোমরা আল্লাহ-র আরশের নিচে। উপরে না।
.
… তিনিই পরাক্রান্ত স্বীয় বান্দাদের উপর। তিনিই জ্ঞানময়, সর্বজ্ঞ। [সূরা আল-আন’আম, ১৮]
.
আর তোমাদের আগে ‘আদ জাতি বলেছিলঃ
.
“… আমাদের অপেক্ষা অধিক শক্তিধর কে?
.
আর আল্লাহ্ ‘আযযা ওয়া জাল তাদের জবাব দিয়েছিলেনঃ
.
তারা কি লক্ষ্য করেনি যে, যে আল্লাহ তাদেরকে সৃষ্টি করেছেন, তিনি তাদের অপেক্ষা অধিক শক্তিধর ? বস্তুতঃ তারা আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করত। [সূরা ফুসসিলাত, ১৫]
.
.
আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এমন এক দল আছে, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ বলেনঃ
.
“…তারা তোমাদের প্রতি কুন্ঠাবোধ করে। যখন বিপদ আসে, তখন আপনি দেখবেন মৃত্যুভয়ে অচেতন ব্যক্তির মত চোখ উল্টিয়ে তারা আপনার প্রতি তাকায়। অতঃপর যখন বিপদ টলে যায় তখন তারা ধন-সম্পদ লাভের আশায় তোমাদের সাথে বাকচাতুরীতে অবতীর্ণ হয়। তারা মুমিন নয়…” [আল-আহযাব,১৯]
.
আর আল্লাহ-র বান্দাদের মধ্যে এমনো এক দল আছে, যাদের ব্যাপারে আল্লাহ্ আর রাহমান আর-রাহীম বলেনল
.
মুমিনদের মধ্যে কতক আল্লাহর সাথে কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে। তাদের কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষা করছে। তারা তাদের সংকল্প মোটেই পরিবর্তন করেনি।
.
.
.
তো, যা বলছিলাম…ব্যাপারটা দৃষ্টিভঙ্গির।
লিখেছেন :-asif adnan
No comments:
Post a Comment